Posts

Showing posts with the label বাঙালি

গোঁফ ভ্রম

Image
কিছু দিন আগে হঠাৎ করে গোঁফ রেখেছিলাম। গোঁফের কারনে প্রথম দেখাতেই অনেকে আমাকে দক্ষিণ ভারতীয় তামিল নয়তো শ্রীলঙ্কান ভেবে বসে থাকতো। এমনটাই হয়েছিলো বেশ কদিন আগে নরওয়েজিয়ান শিল্পীদের সাথে বড় দিনের মধ্যাহ্ন ভোজের অনুষ্ঠানে। আমার পাশে বসা এক শিল্পী আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় থাকেন? জবাবে বললাম দ্রবাক। তিনি বললেন দ্রবাক সুন্দর শহর, কার্টুনিষ্টদের শহর, কার্টুনিষ্ট গ্যালারী আছে, বাংলাদেশী এক কার্টুনিষ্ট আছে যিনি নিজ দেশে কার্টুন এঁকে জেল খেটেছিলেন, নির্যাতিত হয়েছিলেন তিনিও আপনার মত দ্রবাকেই থাকেন। আমি মুচকি হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি ঐ কার্টুনিষ্টকে চেনেন? তিনি জবাবে বললেন, না কখনো দেখা হয়নি তবে তার সম্পর্কে পত্রিকায় পড়েছি। আমি মুচকি হেসে বললাম, আচ্ছা। আমাকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি তাকে চেনেন? মানে, ঐ বাংলাদেশি কার্টুনিষ্ট কি আপনার বন্ধু? আমি বললাম, জ্বি না, তিনি আমার বন্ধু নন, আমিই তিনি। আমার জবাব শুনে তিনি নড়েচড়ে বসলেন এবং উচ্চ স্বরে হাসতে হাসতে বললেন, সত্ত্যি! আপনিই সেই কার্টুনিষ্ট? উনার অট্ট হাসির কারনে পাশে যারা বসেছিলেন তারা

বাংলাদেশি চিংড়ি

Image
আমি প্রায়ই বাজার থেকে প্যাকেটজাত চিংড়ি মাছ কিনতাম। কিন্তু ঠিক কখনোই বুঝতে পারিনি মাছ গুলো কোন দেশি। সেদিন রান্না করার পর নরওয়েজিয়ান এক অতিথি এসেছিলো। তিনি খেতে খেতে বললেন এই চিংড়ি মাছ গুলো নরওয়েজিয়ান চিংড়ি  মাছ থেকে ভিন্ন, কোথা থেকে কিনেছো,  এ গুলো কোন দেশি?  প্যাকেট হাতে নিয়ে হাতড়াতে হাতড়াতে দেখতে পেলাম এক জায়গায় ডাচ ভাষায় লেখা আছে ''Product uit Bangladesh'' অর্থাৎ বাংলাদেশের পণ্য। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশি হিসেবে গর্বে বুকটা ভরে উঠলো।  হতচকিত আমি সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছল কণ্ঠে অতিথিকে জবাব দিলাম, কোন দেশি মানে? এটা তো আমার দেশের চিংড়ি, বাংলাদেশি চিংড়ি।  অতিথির পাতে আরো কিছু চিংড়ি তুলে দিয়ে বললাম, খান, মজা করে খান। অতিথি মজা করে খেতে লাগলো।  খাওয়া দাওয়া শেষে অতিথিকে ঐ চিংড়ির দোকানের ঠিকানা জানিয়ে বললাম বাংলাদেশি চিংড়ি লাগলে ঐ দোকান থেকে কিনে নিবেন। আর সবাইকে বলবেন বাংলাদেশি চিংড়ি অনেক সুস্বাদু।    আমার দেশের পণ্য সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে যাক বিশ্বময় আর অর্থনীতিতে স্বাবলম্বী হোক আমার মাতৃভূমি। 

টুনস ম্যাগ আন্তর্জাতিক পুরস্কার সমূহ

Image
টুনস ম্যাগ থেকে প্রতি বছর দুই ধরণের পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে। ১. কার্টুনিস্ট অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার (১ জন) ২. আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী পুরস্কার (১২ জন) কার্টুনিস্ট অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার: প্রতি বছর একজন মাত্র কার্টুনিস্ট এই পুরস্কার পেয়ে থাকে। টুনস ম্যাগের পাঠকেরা সারা বছর তাদের প্রিয় কার্টুনিস্টকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়ে থাকে। মনোনীত কার্টুনিস্টদের মধ্য থেকে বিচারক মন্ডলীর ভোটে বছর শেষে একজন মাত্র কার্টুনিস্ট কে এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়। পুরস্কার হিসেবে একটি নিদৃষ্ট পরিমান অর্থ ও সনদপত্র বিজয়ীকে প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, পুরস্কারের অর্থ আরিফুর রহমানের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদান করা হয়ে থাকে। আপনি চাইলে আপনার প্রিয় কার্টুনিস্টকে নিম্নোক্ত লিংকে গিয়ে মনোনয়ন দিতে পারেন। লিংক: http://www.toonsmag.com/p/award.html আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী পুরস্কার: টুনস ম্যাগের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রতিযোগিতার ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বিচারক মন্ডলীর ভোটে পুরস্কার বিজয়ী ১২ জন কার্টুনিস্ট কে এই পুর

নরওয়েতে পাঁচ বছর

Image
আমি নরওয়েতে অবস্থান করছি আজ পাঁচ বছর ও পাঁচ দিন। ২০১০ সালের ৩০ শে নভেম্বর সকাল ৬ টায় নরওয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলাম ঢাকা থেকে।  ঢাকা থেকে দুবাই, দুবাই থেকে ফ্রাঙ্কফুট এবং  ফ্রাঙ্কফুট থেকে নরওয়ে, সব মিলিয়ে প্রায় ১৮ ঘন্টার ভ্রমন। আর ১ লা ডিসেম্বর ছিল নরওয়েতে আমার প্রথম দিন। চারিদিকে প্রচুর তুষার, মাইনাস ২০ ডিগ্রী ঠান্ডা। সব কিছু তুষারে মোড়ানো রূপকথার রাজ্যের মত লাগছিল। প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতাম, কখনো বা পত্রিকা, রেডিও বা টিভিতে ইন্টারভিউ কখনো কখনো টিভিতে গিয়ে স্বশরীরে গিয়ে সংবাদের মাঝে সাক্ষাত্কার দিতে হয়েছে। বিষয় গুলো আমি খুব উপভোগ করেছি। ১ লা ডিসেম্বর এখানে পরিচিত হলাম স্থানীয় মেয়রের সাথে। মেয়রের নাম থোরে ভেস্তবি, খুব আন্তরিক একজন মানুষ। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি আমাকে দাপ্তরিক ভাবে অভ্যর্থনা জানালেন, মেয়রের সঙ্গে একটা পত্রিকায় একটা ইন্টারভিউ দিলাম এবং মধ্যাহ্ন ভোজের জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। মধ্যাহ্ন ভোজের সময় তিনি আমাকে জানালেন আগামী ২০ ডিসেম্বর ২০১০ নরওয়ের রাজা এবং রানী দ্রবাক শহর ভ্রমনে আসছেন। এই উপলক্ষ্যে তিনি বিশেষ কিছু কর

ফেসবুক সেলিব্রেটি

ফেসবুকে অনেক উঠতি সেলিব্রেটি আছেন, যারা ফেসবুকে নিজের নামে ফ্যান পেজ খুলে লাইক দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান, এরপর ফ্যান পেজে লাইক পাওয়ার পর আলগোছে ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে রিমুভ করে দিয়ে থাকেন। নিজেকে ফ্যান হিসাবে আবিষ্কার করার  পর, আমি উক্ত সেলিব্রেটিকে ধন্যবাদ স্বরূপ একটা বার্তা পাঠিয়ে থাকি; যেমন: ''ধন্যবাদ, আপনার ফ্যান হিসাবে ঝুলে থাকার মত যোগত্যা এখনো অর্জন করতে সক্ষম হই নাই, তাই  আপনার ফ্যান পেজ থেকে আমার লাইক টা তুলে নিলাম। আপনার ফ্যান হিসাবে ঝুলে থাকার মত যোগত্যা অর্জন করা মাত্র নিজ দায়িত্বে এসে লাইক দেব, দুঃচিন্তা করবেন না। ভালো থাকবেন।'' ফেসবুকে অনেক উঠতি সেলিব্রেটি আছেন, যারা ফেসবুকে নিজের নামে ফ্যান পেজ খুলে লাইক দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান, এরপর ফ্যান পেজ... Posted by Arifur Rahman on  Wednesday, October 28, 2015

পাছে লোকে কিছু বলে তাই আমিও বলি

সেদিন এক শুভাকাংখী আমাকে অবহিত করলেন যে, অনেক বাংলাদেশীরাই আছেন যারা মনে করে থাকেন আমি নাকি নরওয়েতে এসে ট্যাক্সি চালিয়ে জীবন যাপন করে থাকি। প্রথম কথা: আমি মনে করি: ভিক্ষা, চুরি, ডাকাতি এবং ছিনতাই বাদে সৎ পথে অর্থ অর্জনের সকল পেশাই সম্মানের, সেটা যত ছোট কাজই হোক না কেন। দ্বিতীয় কথা: আমি বাইসাইকেল  চালানোটাও ঠিক মত জানি না। দেশে থাকতে আমার এক আত্মীয়ের বাইসাইকেল ধার করে চালানো শেখার চেষ্টা করেছিলাম বেশ কয়েকবার। শিখতে গিয়ে বেশ কয়েকটা ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিলাম। তাই সাইকেল চালানোর ইচ্ছেটা ছিকেয় তুলেছি বহু আগে। এখানে আসার পর আমার এখানকার কথিত নানা-নানী জন্মদিনের উপহার হিসাবে আমাকে একটা বাইসাইকেল কিনে দিয়েছিল সেই ২০১১ সালে। এরপর সাইকেলটাকে সেই যে গ্যারেজে বন্দী করেছি, এরপর আর সাইকেলটাকে নিয়ে কখনো বের হই নাই, চালাতে গিয়ে যদি কোনো দূর্ঘটনা ঘটে, এই ভয়ে। তৃতীয় কথা: আমার দেশের সমান্তরাল ভূমিতে দুই চাকার সাইকেল চালানোর অযোগ্য আমি, আর বিদেশের এই উচু নীচু ভূমিতে চার চাকার গাড়ি চালাতে গিয়ে যে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে? তাই আমি মনের ভুলেও ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার কথা কখনো ভ

আমার জীবনযাপন

আমার জীবনযাপন সাধারণত আর আর দশ জন মানুষের থেকে একটু আলাদা, বিশেষ করে আমার ছুটির দিন গুলোতে। কারণ- সবাই যখন ঘুমোয় আমি তখন জাগি, আর আমি যখন ঘুমোই সবাই তখন জাগে। এটা আমি আসলে ইচ্ছে করে যে করি তা কিন্তু নয়। এর কারণ- আমি এক সাথে একাধিক প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত, আর সেই কারণে আমাকে সব কিছুতেই সময় দিতে হয়। অনেকে মনে আমি শুধু কাটুন-ই আঁকি এর বাইরে আমি আর কোনো কাজ পারি না বা করি না এই ধারণা কিন্তু ঠিক না। আমি এখানকার বেশ কয়েকটা সংবাদপত্রে ফ্রিল্যান্স কার্টুনিস্ট হিসাবে কাজ করি, লেখাপড়া করি, একটা রাষ্ট্রীয় মন্ত্রণালয়ে বাংলা ভাষার শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত আছি, একটা প্রতিষ্ঠানের ওয়েব ডেভলপার হিসাবে কাজ করি, টুনস ম্যাগ নিয়ে সময় দিতে হয়। যেমন, টুনস ম্যাগের অন্যান্য কার্টুনিস্ট দের কার্টুন ছাপানো, তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা। এছাড়া FnF.fm নামে আমার একটা রেডিও চ্যানেল আছে সেখানে অনেক সঙ্গীত শিল্পীরা গান পাঠায়, সেগুলো শুনে শুনে প্রচার যোগ্য গান গুলো প্রচার করতে হয়, তাদের সাথেও যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। কাজের তালিকায় দিন দিন নতুন নতুন কাজ যোগ হচ্ছে। এরপর আমার একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে, সেখানে রান্নাবান্না, খাওয়া

'যুদ্ধের শিশু' আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রদর্শনী, নরওয়ে - ২০১৫

Image
১২ সেপ্টেম্বর নরওয়েজিয়ান কার্টুনিস্ট গ্যালারিতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, 'যুদ্ধের শিশু' শীর্ষক আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রদর্শনী। উক্ত প্রদর্শনীতে ৫১ টি দেশের ১২৮ জন কার্টুনিস্ট অংশ নিয়েছেন। সর্বমোট কার্টুন জমা পরেছিল ৫৫৮ টি, এর মধ্য থেকে ৭০ টি কার্টুন নিয়ে এই আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রদর্শনী শুরু হতে যাচ্ছে। নরওয়ের বেশ কয়েকটি গ্যালারিতে প্রদর্শিত হবে এছাড়া সুইডেন,  স্লোভাকিয়া, নেদারল্যান্ড,অর্মেজিয়া, তুরস্ক, জর্দান ও দক্ষিন আফ্রিকায় প্রদর্শিত হবে। উক্ত  আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রদর্শনীর আয়োজক হিসাবে রয়েছেন বাংলাদেশী কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমান এবং  সিরিয়ান কার্টুনিস্ট ফাদি আবু হাসান।  সার্বিক সহযোগিতায় নরওয়েজিয়ান কার্টুনিস্ট হাউজ এবং টুনস ম্যাগ। এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন

শিশু দিবস

Image
নরওয়ের অকেশুশ প্রদেশে একটা জাদুঘর আছে। নাম ফোলো মিউজিয়াম। জাদুঘর কতৃপক্ষ প্রতি বছর গ্রীষ্মে ও শীতকালে শিশু দিবস পালন করে।  এই শিশু দিবস উপলক্ষ্যে উক্ত জাদুঘরে হাজার হাজার শিশুরা আসে তাদের অভিবাবকদের সঙ্গে। শিশুরা পুরাতন আমলের ঘরবাড়ি গুলো ঘুরে ঘুরে দেখে, ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ায়, প্রত্নতত্ত্ব বিষয়াদি ও আঞ্চলিক ইতিহাস এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানে।  উল্লেখ্য সেই জাদুঘরের ভিতরে ৩'শ বছর আগের পুরনো একটা বিদ্যালয় আছে।  সেই পুরনো আমলের বেঞ্চিতে বসে শিশুরা ছবি আঁকা শেখে। জাদুঘরটা নরওয়ের হলেও এই  বিদ্যালয়ের শিক্ষক কিন্তু নরওয়েজিয়ান নয়।  সে একজন বাঙালি। ( এখন চিন্তা করতে থাকুন ব্যক্তিটা কে হতে পারে। ) শ্রেণীকক্ষে শিশুরা অনেক কিছু আঁকা শেখে।  যেমন: হাতি, ঘোড়া, বিড়াল, কুকুর, সজারু, পাখি, ফুল, ঘর-বাড়ি, নদী সহ আরো অনেক কিছু। শিশুরা কোনো কিছু আঁকা শিখতে চাইলে তারা তাদের শিক্ষকে জিজ্ঞাসা করে।  আর শিক্ষক খুব তাদের সহজ  ভাবে আঁকার কৌশল তাদের শিখিয়ে দেন। অনেক সময় শিশুদের সঙ্গে শিশুদের বাবা-মা, দাদা-দাদী বা নানা-নানিও ছবি আঁকা শিখে থাকেন। গতকাল সেখানে শিশু দিবস ছিল।  প্রায় হাজার শিশুর সম