Posts

Showing posts with the label ভ্রমন

প্রকৃতি ভ্রমণে একদিন

Image
তখন গ্রীষ্মকাল ছিল। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে মধ্য-দক্ষিণ নরওয়ের পর্বত ঘেরা প্রকৃতি ভ্রমণে গিয়েছিলাম আমার এক বন্ধুর নিমন্ত্রনে। সেদিনের শেষ বিকেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিজেকে স্বর্গলোকে আবিষ্কার করেছিলাম এই দেখে যে, সেখানে সময় অসময়ে মেঘেরা আসে পর্বতকে আলিঙ্গন করতে। আমি মেঘের মাঝে হেটে ছিলাম পর্বতের গা বেয়ে। চারিদিকে ঝর্ণার কলকলে ধ্বনি, পাখিদের কিচিরমিচির আর ভূপৃষ্ঠের সবুজ লতা-গুল্মে পুষ্পরাজিরা মেতেছিলো আপন রূপ প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায়। সে এক অপরূপ দৃশ্য। নরওয়েজীয় বন্ধুর বাংলো থেকে গাড়ি চালিয়ে প্রায় এক ঘন্টার পথ পেরিয়ে আমরা গিয়েছিলাম মালভূমি পরিভ্রমনে। মালভূমির উপরেই রয়েছে এক পর্বতমালা। এই অঞ্চলটিকে ঘিরে একাধিক পৌরাণিক গল্পকাহিনী প্রচলিত আছে। এই স্থানকে নরওয়েজিয়ান ভাষা বলা হয় ''Jotunheimen'' বাংলায় ভাবার্থ দাঁড়ায় ''দৈত্যদের নিবাস''। ভূপৃষ্ঠে ছোট বড় অসংখ্য পাথর, পানির কলকল ধ্বনি শুনতে পাচ্ছিলাম, পর্বতের গা বেয়ে ছোট বড় অসংখ্য পানির ধারাও চোখে পড়ছিলো। কোথাও পানি জমে ছোট্ট ডোবা বা পুকুরের মত সৃষ্টি হয়েছে আর সেই পানিকে কেন্দ্র করে একধরণের পাখির আনাগোনা চোখে পড়ার

নরওয়েতে পাঁচ বছর

Image
আমি নরওয়েতে অবস্থান করছি আজ পাঁচ বছর ও পাঁচ দিন। ২০১০ সালের ৩০ শে নভেম্বর সকাল ৬ টায় নরওয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলাম ঢাকা থেকে।  ঢাকা থেকে দুবাই, দুবাই থেকে ফ্রাঙ্কফুট এবং  ফ্রাঙ্কফুট থেকে নরওয়ে, সব মিলিয়ে প্রায় ১৮ ঘন্টার ভ্রমন। আর ১ লা ডিসেম্বর ছিল নরওয়েতে আমার প্রথম দিন। চারিদিকে প্রচুর তুষার, মাইনাস ২০ ডিগ্রী ঠান্ডা। সব কিছু তুষারে মোড়ানো রূপকথার রাজ্যের মত লাগছিল। প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতাম, কখনো বা পত্রিকা, রেডিও বা টিভিতে ইন্টারভিউ কখনো কখনো টিভিতে গিয়ে স্বশরীরে গিয়ে সংবাদের মাঝে সাক্ষাত্কার দিতে হয়েছে। বিষয় গুলো আমি খুব উপভোগ করেছি। ১ লা ডিসেম্বর এখানে পরিচিত হলাম স্থানীয় মেয়রের সাথে। মেয়রের নাম থোরে ভেস্তবি, খুব আন্তরিক একজন মানুষ। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি আমাকে দাপ্তরিক ভাবে অভ্যর্থনা জানালেন, মেয়রের সঙ্গে একটা পত্রিকায় একটা ইন্টারভিউ দিলাম এবং মধ্যাহ্ন ভোজের জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। মধ্যাহ্ন ভোজের সময় তিনি আমাকে জানালেন আগামী ২০ ডিসেম্বর ২০১০ নরওয়ের রাজা এবং রানী দ্রবাক শহর ভ্রমনে আসছেন। এই উপলক্ষ্যে তিনি বিশেষ কিছু কর

ছবি আঁকতে দ্বীপে

Image
আমাদের ড্রইং গ্রুপের পক্ষ থেকে ছবি আঁকতে আজ আমরা একটা দ্বীপে গিয়েছিলাম। সুইডেনের সাবেক রাজা অস্কারের নাম অনুসারে দ্বীপের  নাম করণ করা হয়েছে ''অস্কারসবর্গ'' বা অস্কারের দ্বীপ। দ্বীপটা অনেক বিখ্যাত।  দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় ওই দ্বীপটা থেকেই হিটলারের পাঠানো যুদ্ধ জাহাজে গোলা বর্ষণ করে ধ্বংশ করে, নরওয়েকে রক্ষা করা হয়েছিল হিটলারের আগ্রাসন থেকে। দ্বীপটার দুইটি অংশে বিভক্ত যা মাঝখানে ছোট্ট  একটা কাঠের সেতু দিয়ে জোড়া দেয়া। সেতুটার নিচ দিয়ে  ছোট ছোট দ্রুতযান নৌকা চলাচল করে থাকে। দ্বীপের  বড় অংশের উপর পুরাতন একটি কেল্লা। যা আকাশ থেকে দেখলে ইংরেজি D অক্ষরের মত দেখায়। যা এখন জাদুঘরে পরিনত করা হয়েছে। দ্বীপের উপরে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে ব্যবহৃত দানব আকৃতির কামান গুলো এখনো শোভা পাচ্ছে। দ্বীপের বেশ কিছু স্থানে রয়েছে পাঁচ ছয় মিটারের ছোট ছোট ঝিনুক বালুর সৈকত। পানি প্রচন্ড ঠান্ডা আর লবনাক্ত। পাশ দিয়ে যখন  টাইটানিক-আকৃতির বিশাল বিশাল জাহাজ গুলো যাচ্ছিল তখন ঢেউয়ের সঙ্গে ছোট ছোট তারা মাছ আর ঝিনুকেরা তীরে এসে ভীড় জমাচ্ছিল।  আর কিছু গাংচিল আশেপাশে খাবারের সন্ধান করছিল। আমরা দুপুর থে

স্টকহম আন্তর্জাতিক কমিক উত্সব-২০১৫

Image
আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হলো স্টকহম আন্তর্জাতিক কমিক উত্সব-২০১৫। সেখানে দেশ-বিদেশের অনেক কার্টুনিস্ট ও কমিক শিল্পীরা যোগদান করতে এসেছিলেন। সুইডেনের রাজধানী স্টকহম-এ অনুষ্ঠিত, আন্তর্জাতিক কমিক উত্সব-এর পক্ষ থেকে আমাকে অফিসিয়াল গেস্ট বা দাপ্তরিক অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।  আমার যাওয়া আসার জন্য তারা আমাকে বিমানের টিকেট, হোটেল, থাকা খাওয়া সহ যাবতীয় সুবিধা প্রদান করেছিলেন। গত শুক্রবার আমি সেখানে গিয়ে ছিলাম। বিমান থেকে নেমেই দেখলাম একজন আমার জন্যে অপেক্ষা করছেন, হাতে তার একটা বোর্ড, তাতে আমার নাম লেখা, আমি তাকে নিশ্চিত করলাম আমিই আরিফুর রহমান।  এরপর হোটেলে গিয়ে ব্যগটা রেখে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমাদের সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো। কার্টুনিস্ট-দের অধিকাংশই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে, এছাড়াও কিছু জাপানি, আর কয়েক জন আমেরিকা ও ব্রাজিল থেকে এসেছিলেন। গত কাল সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর একটা আলোচনা অনুষ্ঠান ছিল, অলোচনা অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন মধ্য প্রাচ্যের এক কার্টুনিস্ট। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেছিলেন সুইডিশ রেডিও-র সাবেক এক কর্মকর্তা

তুর্কি সমালোচনা

Image
তুর্কীদের একটা অভ্যাস খুব খারাপ, সেটা হলো: খাওয়া শেষ হতে না হতেই টেবিল পরিস্কারের জন্য প্লেট ধরে টানা টানি শুরু করে দেয়। ভাবটা এমন; অনেক খেয়েছ বাছা, বিলটা দিয়ে এখন যাও। যেমন: আপনি হয়ত খাওয়া শেষ করেননি প্লেটে খাবার অর্ধেক অবশিষ্ট আছে, আপনি ড্রিঙ্কস পান করছেন আর পাশের জনের সাথে কথা বলছেন। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারবেন, আপনার প্লেট টা নেই, ওয়েটার বিদ্যুত গতিতে এসে প্লেটটা নিয়ে গেছে। অধিকাংশ তুর্কি ইংরেজি বোঝে না,  তাই ইংলিশে কিছু বললেও বোঝে না। সমস্যা হলো তুর্কীদের সংকৃতিতে। তুর্কীদের এই ধরনের ব্যবহারকে অনেকে তুর্কীদের অভদ্রতা মনে করেন। তুর্কীদের এই বিষয় গুলি নিয়ে তুরস্কের প্রতিবেশী দেশগুলোতে অনেক কৌতুক প্রচলিত আছে। বাঙালি হিসাবে আমি গর্ব করে বলতে পারি যে আমরা অতিথি পরায়ন জাতি।