Posts

Showing posts with the label জীবন

একটা কার্টুন আর পাঁচ অংকের সম্মানী

Image
সম্প্রতি নরওয়ের একটি সাময়িক পত্রিকায় প্রকাশিত আমার একটি রাজনৈতিক কার্টুন।   কার্টুনের বিষয়: রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নরওয়ে ২০১৫।    মাস দুয়েক আগে এক সাময়িক পত্রিকার সম্পাদকের নিকট হতে একখানা ই-পত্র পেয়েছিলাম। আমার ই-পত্রের ঠিকানা তিনি  কোথায় পেয়েছিলেন তা আমার অজানা। কারণ- তিনি আমার পূর্ব পরিচিত ছিলেন না। সম্পাদক সাহেব পত্রটি লিখেছিলেন ''নতুন নরওয়েজিয়ান ভাষায়।'' নতুন নরওয়েজিয়ান ভাষা জানা না থাকলেও, বার্তা পড়ের সারমর্ম অনুমান করতে পেরেছিলাম বিশেষ করে সম্মানীর ঘরে পাঁচ অংকের সংখ্যাটা দেখে। বিশ্বাসও  করতে ভালো লাগছিল আবার দ্বিধায়ও ভুগছিলাম, কারণ এই অংকের সম্মানী একটা কার্টুনের জন্য এই দেশে কেউ আমাকে প্রস্তাব করে নাই। আবার ভাবছিলাম অনুমান ভুলও হতে পারে, কারণ অনুমান সব সময় সঠিক হয় না। দ্বিধা দূরকরা প্রয়োজন, তাই আমার অন্যতম ঘনিষ্ট বান্ধবীর সহায়তা নিলাম। তাকে জিজ্ঞাসা করার লক্ষ্যে একটা রেস্তোরাঁয় আমন্ত্রণ জানালাম। এরপর জিজ্ঞাসা করলাম, সম্পাদক সাহেব কি বলতে চেয়েছেন, আমি তো এই সংখ্যাটা ছাড়া আর কিছু তেমন বুঝি নাই।  তুমি কি আমাকে ই-বার্তাটা বুঝিয়ে বলবে।  তো, তার ব

শিশু দিবস

Image
নরওয়ের অকেশুশ প্রদেশে একটা জাদুঘর আছে। নাম ফোলো মিউজিয়াম। জাদুঘর কতৃপক্ষ প্রতি বছর গ্রীষ্মে ও শীতকালে শিশু দিবস পালন করে।  এই শিশু দিবস উপলক্ষ্যে উক্ত জাদুঘরে হাজার হাজার শিশুরা আসে তাদের অভিবাবকদের সঙ্গে। শিশুরা পুরাতন আমলের ঘরবাড়ি গুলো ঘুরে ঘুরে দেখে, ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ায়, প্রত্নতত্ত্ব বিষয়াদি ও আঞ্চলিক ইতিহাস এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানে।  উল্লেখ্য সেই জাদুঘরের ভিতরে ৩'শ বছর আগের পুরনো একটা বিদ্যালয় আছে।  সেই পুরনো আমলের বেঞ্চিতে বসে শিশুরা ছবি আঁকা শেখে। জাদুঘরটা নরওয়ের হলেও এই  বিদ্যালয়ের শিক্ষক কিন্তু নরওয়েজিয়ান নয়।  সে একজন বাঙালি। ( এখন চিন্তা করতে থাকুন ব্যক্তিটা কে হতে পারে। ) শ্রেণীকক্ষে শিশুরা অনেক কিছু আঁকা শেখে।  যেমন: হাতি, ঘোড়া, বিড়াল, কুকুর, সজারু, পাখি, ফুল, ঘর-বাড়ি, নদী সহ আরো অনেক কিছু। শিশুরা কোনো কিছু আঁকা শিখতে চাইলে তারা তাদের শিক্ষকে জিজ্ঞাসা করে।  আর শিক্ষক খুব তাদের সহজ  ভাবে আঁকার কৌশল তাদের শিখিয়ে দেন। অনেক সময় শিশুদের সঙ্গে শিশুদের বাবা-মা, দাদা-দাদী বা নানা-নানিও ছবি আঁকা শিখে থাকেন। গতকাল সেখানে শিশু দিবস ছিল।  প্রায় হাজার শিশুর সম

স্টকহম আন্তর্জাতিক কমিক উত্সব-২০১৫

Image
আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হলো স্টকহম আন্তর্জাতিক কমিক উত্সব-২০১৫। সেখানে দেশ-বিদেশের অনেক কার্টুনিস্ট ও কমিক শিল্পীরা যোগদান করতে এসেছিলেন। সুইডেনের রাজধানী স্টকহম-এ অনুষ্ঠিত, আন্তর্জাতিক কমিক উত্সব-এর পক্ষ থেকে আমাকে অফিসিয়াল গেস্ট বা দাপ্তরিক অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।  আমার যাওয়া আসার জন্য তারা আমাকে বিমানের টিকেট, হোটেল, থাকা খাওয়া সহ যাবতীয় সুবিধা প্রদান করেছিলেন। গত শুক্রবার আমি সেখানে গিয়ে ছিলাম। বিমান থেকে নেমেই দেখলাম একজন আমার জন্যে অপেক্ষা করছেন, হাতে তার একটা বোর্ড, তাতে আমার নাম লেখা, আমি তাকে নিশ্চিত করলাম আমিই আরিফুর রহমান।  এরপর হোটেলে গিয়ে ব্যগটা রেখে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমাদের সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো। কার্টুনিস্ট-দের অধিকাংশই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে, এছাড়াও কিছু জাপানি, আর কয়েক জন আমেরিকা ও ব্রাজিল থেকে এসেছিলেন। গত কাল সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর একটা আলোচনা অনুষ্ঠান ছিল, অলোচনা অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন মধ্য প্রাচ্যের এক কার্টুনিস্ট। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেছিলেন সুইডিশ রেডিও-র সাবেক এক কর্মকর্তা

বিভ্রান্ত অভ্যর্থনা

ঘটনাটা হয়েছে কি, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী কে আমি কথা দিয়েছিলাম যে আমি তাকে তার গবেষণায় সাহায্য করছি। তো সেই কথা অনুযায়ী সে আমার বিদ্যায়তন-এ এসে হাজির। মুঠোফোনে একটা ক্ষুদ্রবার্তা পেলাম, ''আমি অভ্যর্থনা কক্ষে অপেক্ষা করছি ''। বার্তাটি পড়া মাত্রই চার তলা থেকে নেমে নীচতলায় অভ্যর্থনা কক্ষে গেলাম। অপেক্ষারত শিক্ষার্থীনি দেখতে কেমন, বয়স কত কিছুই জানি না। গিয়ে দেখি দুই জন মহিলা অপেক্ষা করছে, একজন কুড়ি ঊর্ধ্ব অন্যজন চল্লিশ ঊর্ধ্ব। চল্লিশ ঊর্ধ্ব মহিলা আমাকে দেখে উঠে দাড়িয়ে বলল ''আপনার সঙ্গেই আমার কথা হয়েছিল?'' আমি বললাম ''হ্যা'' সঙ্গে সঙ্গে পাশ থেকে কুড়ি ঊর্ধ্ব মেয়েটা উঠে দাড়িয়ে বলল ''না না, ওনার সঙ্গে  আমার দেখা করার ব্যাপারে কথা হয়েছিল।'' এমতাবস্থায় আমি পুরাই বিভ্রান্ত। দুই জনকেই আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাদের মধ্যে ''ইভা'' কার নাম? কুড়ি ঊর্ধ্ব মেয়েটা জবাব দিল ''আমি ইভা'' আমি বললাম, তাহলে আপনার সাথেই আমার দেখা করার কথা ছিল। ভিতরে চলুন। ইতোমধ্যে এক ভদ্রলোক এসে চল্লিশ ঊর্ধ্ব মহিলাকে বল

সন্ত্রাসী আক্রমন ও আমার প্রতিক্রিয়া

Image
৭/১/২০১৫ প্যারিসের চার্লি হেব্দ ব্যঙ্গ পত্রিকা অফিসে আক্রমন ও কার্টুনিস্টদের গুলিকরে হত্যা ও আক্রমনটা ছিল প্রকৃত পক্ষে বাক-স্বাধীনতায় আক্রমন।  এটি ছিল পৃথিবীর সকল কার্টুনিস্টদের বিরুদ্ধে আক্রমন। ঠিক গতকালের (১৪/২/২০১৫) কোপেনহেগেনের সন্ত্রাসী আক্রমনটা ছিল প্যারিসের চার্লি হেব্দ ব্যঙ্গ পত্রিকা অফিসে আক্রমন-এর ধারাবাহিকতার ফল।  সন্ত্রাসীরা বোঝাতে চাচ্ছে তারা অনেক শক্তিশালী।  তাদের অনেক ক্ষমতা, ঈশ্বরের মত তারাও সর্ব ক্ষেত্রে বিদ্যমান। আমার হাত সন্ত্রাসীদের ভয় পায়না, তাই আঁকছি নির্ভিক ভাবে। আমি আঁকতেই থাকব যতদিন বেচে থাকব।

ক্লাসের গল্প

ক্লাসে। পরীক্ষার কাজ হিসাবে, একটা ১৫ সেকেন্ডের ৩ডি এনিমেশন জমা দিতে হবে।  ১ ঘন্টা যাবত রেন্ডারিং চলছে। কেবল মাত্র অর্ধেক, আরো অর্ধেক রেন্ডারিং বাকি। তাই বসে বসে সময় গুনছি। আজ সকালে আমাদের ক্লাসে নিউজিল্যান্ড-এর মিডিয়া ডিজাইন স্কুলের ৩ডি ডিজাইনের শিক্ষক স্টিভ দরনের পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি আমাদের (৩ডি ছাত্রদের)  উদ্যেশ্যে ৩ডি ডিজাইন ও ভিস্যুয়াল এফেক্ট এর উপরে  বক্তব্য রাখলেন এবং আমাদের কিছু কাজ দেখালেন, যার মধ্যে কিছু ওনার ও কিছু ওনার ছাত্রদের করা। অসাধারণ কিছু কাজ। কাজ গুলো দেখে আমি অনুপ্রানিত। আগামী সপ্তাহ থেকে আমার শীতের ছুটি।  ভাবছি শীতের ছুটিতে বেশি বেশি আঁকা আঁকি করব আর এনিমেশন নিয়ে কাজ করে সময় কাটাব।  

ব্যস্ত সময়

দিন যত যাচ্ছে জীবন তত ব্যস্ত থেকে ব্যস্ত তর হচ্ছে। অনেক কাজ আটকে আছে করি করি করেও করে ওঠা হচ্ছে না।  অনেক ইমেইল জমা হয়ে আছে সময়ের অভাবে পড়ি পড়ি করেও পড়া হয়ে উঠছে না বা উত্তর ও দেয়া হচ্ছে না। মাঝে মাঝে এমন হয় খাবার রান্না করেছি কিন্তু খাওয়ার সময় নাই।  বাস স্ট্যান্ডে বাসের উদ্দেশ্যে দৌড়াতে হবে, কারণ আমি ৫ সেকেন্ড দেরী করলে বাস মিস করব, আর মিস করলেই ক্লাসে ১০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট দেরী হবে।  এখানে যান বহন কারো জন্য ৫ সেকেন্ড ও অপেক্ষা করে না। এমন ও হয়েছে যে, আমি ৫ সেকেন্ডের জন্য বাস মিস করেছি।  সব কিছু মিলিয়ে অনেক ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। 

পথ প্রদর্শক

আজ দুপুরে অসলো স্টেশন থেকে ক্যাম্পাস-এর দিকে রওনা দিয়েছি। দোতলা থেকে চলন্ত সিড়ি বেয়ে নিচে নামব। এমন সময় দেখলাম এক দৄষ্টি প্রতিবন্ধী সাদা ছড়ি হাতে নিয়ে হাতড়াতে হাতড়াতে সিড়ির দিকে আসছে।   বয়েস তার ২৪ কি ২৫ হবে। ভাবলাম, দৄষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ, এমনিতে চেখে দেখে না, হয়ত চলন্ত সিড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে পরে গিয়ে ব্যথা পেতে পারে।  তাকে দেখে আমার খুব করুণা হলো, তাই থমকে দাড়ালাম ও তার কাছে গিয়ে হাত-তা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, ''আমার হাত তা ধর, আমি তোমাকে নিচে নামতে সাহায্য করছি।''  সে আমার হাতটা ধরল।  এরপর তাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কোথায় যাবে?  সে জবাব দিল, ''মদের দোকানে।'' সে আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, তুমি কোথায় যাবে? আমি বললাম, ক্যাম্পাসে। সামনেই, এখান থেকে একটু দুরে।  আমরা ততক্ষণে সিড়ি বেয়ে নেমেছি।  আমি বললাম, ঠিক আছে, আমি তোমাকে সাহায্য করছি, তোমার গন্তব্যে পৌছে দিতে।  সে বলল, সেটা এখানেই।  ( আমি ডানে-বামে তাকালাম।  ডান পাশে একটা একটা পোস্ট অফিস, কিন্তু মদের দোকান আমার চোখে পড়ল না। ) সে বলল, এখন ৫ পা ডানে হাটলে একটা ছোট সিড়ি, সেখান থেকে ২০ পা ডানে হা