ফোনালাপ
আমার জীবনের প্রথম ফোনটা ছিলো নকিয়া ১৬০০ আর এটি ছিলো ২০০৫ সালে। সে সময় ফোনটি ব্যবহার করে ফোন কল এবং ক্ষুদ্র বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি গেম খেলা যেতো। সে সময় ফোনটি আমার প্রিয় ছিলো। এরপর ফোনটি হারানোর পর নতুন একটি নকিয়া ফোন কিনেছিলাম যেটাতে ক্যামেরা ছিলো, ছবি তোলা এবং ভিডিও করা যেতো, আমার কাছে সবচেয়ে বড় বিষয় ছিলো যে এটি দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যেতো, কম্পিউটারের সাথে ফোনটিকে যুক্ত করলেই ইন্টারনেট মোডেম হিসেবে কাজ করতো। যাই হোক দেশ ত্যাগের পর ২০১০ সালে ছোট একটা স্যামসং ফোন কিনে ছিলাম ক্ষণস্থায়ী ব্যবহার করার জন্য। তবে ২০১১ সালে আইফোন কেনার পর স্যামসং ফোন সেট তো দূরের কথা নম্বরটিও ব্যবহার করিনি। আইফোন ফোর এস একটানা ছয় বছর ব্যবহার করেছি, বেশ ভালো সেবা দিয়েছিলো ফোনটি। শেষের দিকে ২০১৭ সালে মনে হলো ফোনটি বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছে, অনেকটা ধীর গতিতে কাজ করছে, কোন একটা বাটনে ক্লিক করলে সময় নিত প্রায় পাঁচ থেকে দশ সেকেন্ড। পরিশেষে বিরক্ত হয়ে নতুন ফোন কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সে সময় আইফোনের সর্ব শেষ সংস্করণটি ছিলো আইফোন সেভেন প্লাস। বড় পর্দার শতাধিক বৈশিষ্ট্য যুক্ত ফোন, তথ্য ধারণ ক্ষমতা ১২৮ গিগাবাইট।
বিগত দুই বছরে যে পরিমান ছবি এবং ভিডিও ধারণ করেছি যে, ফোনের আর কোন ধারণ ক্ষমতা নাই, অর্থাৎ ফোনের মেমরি ফুল। তাই ফোনের দোকানে গিয়েছিলাম গতকাল, কারণ আমার ফোন ইন্স্যুরেন্স করা, এটি হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে বা আমি চাইলে এটি বদল করে সর্ব শেষ নতুন ফোনটি নিতে পারবো, তবে অবশ্যই ফোনটি কেনার দুই বছরের ভিতরে। দোকানীকে বললাম আমি এই ফোনটি বদল করে আরো বেশি তথ্য ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন আইফোন এক্সএস ম্যাক্স ফোনটি নিতে চাই। দোকানী আমার ফোন নম্বর দিয়ে কম্পিউটারে তাদের ডাটাবেসে আমার ফোনের তথ্য যাচাই করলেন এবং জানালেন যে পাঁচ দিন আগে আপনার ফোনের বয়স দুই বছর পূর্ণ হয়েছে অর্থাৎ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে, এমতাবস্থায় আপনি এটির বদলে নতুন ফোন নিতে পারবেন না, তবে আপনি চাইলে অবশ্যই নতুন আরো একটি ফোন কিনতে পারবেন।
নতুন ফোনের দাম এবং বৈশিষ্ট্য দেখে মনে হলো নতুন ফোনের বদলে এ্যাপেল আইপ্যাড প্রো ১২ ইঞ্চি টা কিনে ফেলি, যেটি আমি চাইলে কিবোর্ড যুক্ত করে ল্যাপটপ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবো, আবার এ্যাপেল পেন দিয়ে ছবি আঁকার ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহার করতে পারবো। তাই আজ ইন্টারনেটে অর্ডার দিলাম, তিন দিনের মধ্যেই পণ্যটি হাতে পাবো বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
পুনশ্চ: আমার এই লেখাটি কোন ফোন বা পণ্যের বিজ্ঞাপন নয়। এখানে আমার জীবনে ফোন সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা বা ব্যক্তিগত মতামত সমূহ লিপিবদ্ধ করেছি। আর আমি এ্যাপেল পণ্য ব্যবহার করি কারণ, আমি এটি ব্যবহার করে নিরাপদ এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমার ধারণা এর ভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের কারণে আইফোন বা অন্যান্য এ্যাপেল পণ্য থেকে হ্যাকিঙের মাধ্যমে তথ্য চুরি কম হয়।
তবে জীবনে আমি অন্য একাধিক ব্রান্ডের ফোন এবং ট্যাবলেট কিনেছি, তবে সেগুলোর কোনটিই নিজে ব্যবহার করার জন্য নয়, কাউকে না কাউকে উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য।
Comments
Post a Comment