দূরত্ব

একটা সময় ছিল যখন পারস্যের কন্যার সাথে প্রণয় ছিল। যদিও দুজন ছিলাম দুই মহাদেশের বাসিন্দা, দূরত্বের কাছে মাথা নোয়াবার নই; এমনি ছিল মনোবল। একে অন্যের সাথে দেখা করার জন্য সকল বাঁধা পাহাড় পর্বত ডিঙিয়ে, দূরত্বকে পিছনে ফেলে নয়নে নয়ন মেলাতে বছরে দুই একবার পাড়ি জমাতাম দুই মহাদেশের মিলন স্থলে, তুরস্কে।
দুজন একসাথে, আমার হাত তাঁর বগলে, একসাথে  ঘুরতাম - বেড়াতাম ইস্তানবুল, আন্তালিয়ার পথে প্রান্তরে, নীল আকাশের নিচে, সাগর তীরে, অরণ্যে - লোকালয়ে, রাস্তায় মানুষের ভিড়ে, পারস্য কন্যা আমার হাত ছাড়তোনা কখনোই।
পাথরের আসনে দুজনে মুখোমুখি বসে জোস্না রাতে, হাতে হাত রেখে পূর্ণিমা দর্শন, জোস্নায় স্নান। ভূমধ্যসাগরের জল চিকচিক করতো চন্দ্র আলোয়, হাওয়ার আবেশে, দুইজন দর্শক
আমি আর সে, অনুভূতিরা গভীর হতো রাতের সাথে।

বিদায় বেলায় তাঁর মাথা আমার কাঁধে, ভিজতো গাল তাঁর নয়ন জলে তবু ঠোঁটে হাসি কথার ছলে, যেতে হবে ছেড়ে তবু মন বাঁধ সাধে, আমি সান্তনা দিতাম; আবার দেখা হবে বছর গড়ালে।
হাওয়াই জাহাজ উড়াল দিতো, হয়ে যেত সে মেঘের আড়ালে, চোখের আড়ালে।

বাড়ি ফিড়ে শুরু হতো আবার দুজনের দিন গোনা। দিন গুনতে গুনতে, একদিন দিন আবার আসতো ফিড়ে, দুজনে মিলতাম, হাতে হাত রাখতাম সাগর তীরে, চাঁদনী রাতে, আমার হাত তাঁর বগলে শত মানুষের ভিড়ে।


এভাবে চলতে চলতে একদিন দিন আর ফিড়ে আসেনা, পারস্য কন্যা আর আগের মতো হাসে না, দূরত্বকে তাঁর হঠাৎ ভয়, মনে সংশয়।
ভয়কে করলে ভয় ফলাফল পরাজয়।
অবশেষে একদিন দূরত্বেরই হলো জয়, আমার পরাজয়।

Comments

Popular posts from this blog

How to Become a Successful Cartoonist in the Digital Age

What Every New Cartoonist Needs to Know in 2025

A Cartoonist’s Guide to Getting Published Online