গ্রীষ্মকালীন গৃহউৎসব

প্রতিবছর স্থানীয় নরয়েজিয়দের গ্রীষ্ম, শীত, শরৎ ও বসন্তকালীন বিভিন্ন উৎসবে আমি আমন্ত্রণ পেয়ে থাকি। এবং তাদের সাথে উৎসব উজ্জাপনও করে থাকি। 
গতকালকে, একটি নরওয়েজীয় পরিবার ও তাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে গ্রীষ্মকালীন গৃহউৎসব উৎযাপনের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। বিকেল পাঁচটায় নিমন্ত্রণকারী গাড়ি নিয়ে এসেছিল আমাকে বাসা থেকে নিতে। উৎসবে পানাহার এর সাথে সাথে আমরা মেতে ছিলাম বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ আলোচনায়। 

উক্ত অনুষ্ঠানে যে সকল পুরুষগণ এসেছিলো, একমাত্র আমার বাদের সকলের স্ত্রী থাই বংশোদ্ভূত। থাইদেশের লোকজনদের সাথে কথা বলে আমি যেটা বুঝি, তা হল তাঁরাও বাঙালিদের মত আন্তরিক, অতিথি পরায়ণ এবং মিশুক। 

আগত পুরুষগণের মধ্যে এক ষাট ঊর্দ্ধ প্রবীণ লোক ছিলেন যিনি চার বছর আগে আমার প্রতিবেশী ছিলেন এবং তিন বছর হলো থাইদেশ থেকে এক যুবতী মহিলাকে বিয়ে করে নরওয়েতে এনেছেন। সাবেক প্রতিবেশীর সাথে করমর্দন করার পর তিনি তার নতুন স্ত্রীর সাথে যখন পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন তখন তার স্ত্রী জানালেন যে, তিনি আমাকে চেনেন। 
নতুন স্ত্রীর মুখে আমার সম্পর্কে শোনার পর প্রবীণ লোকটি কৌতূহলী হয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন, ''এনার সাথে তো তোমার আগে কখনো পরিচয় হয় নি, কিভাবে চেনো?''
নতুন স্ত্রী জবাব দিলেন, ''আমি যে স্কুলে নরওয়েজিয়ান ভাষা শিখতে যাই, সেই স্কুলের নরওয়েজিয়ান ভাষা শিক্ষার ক্লাসে এনার জীবনী পড়েছি।''
মহিলার মুখ থেকে এই কথা শোনার পর জিজ্ঞাসা করলাম, ''আপনি কোন স্কুলে ভাষা শেখেন?'' 
উত্তর শোনার পর বললাম, ''চার বছর আগে ঐ স্কুলে আমিও ভাষা শিখতাম।'' 
  
এরপর, পর্যায়ক্রমে আমাদের আলোচনা নরওয়ে, তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ এবং বার্মা-র সীমানা পেরিয়ে থাইদেশে গিয়ে থামলো।   
রাত দুইটায় মনে হলো অনেক পানাহার হয়েছে, আলোচনাও হয়েছে অনেক এখন বাড়ি ফিরতে হবে।  

Comments

Popular posts from this blog

How to Become a Successful Cartoonist in the Digital Age

What Every New Cartoonist Needs to Know in 2025

A Cartoonist’s Guide to Getting Published Online