Posts

মুহূর্তের আলিঙ্গনে

বছর খানেকের তরে আমি ভুলে যেতে চাই, কে আমি, কোথায় ছিলাম, কোথায় এলাম, কি হারালাম, কি পেলাম, কোনটা নামি, কোনটা দামি।  উদাসীন আমি, ভাবনা ছিল কম জীবন, ভবিষৎ প্রসঙ্গে অল্পতেই ছিলাম তুষ্ট, সন্তুষ্ট। চলতাম সময় স্রোতে বেহুঁশে গা ভাসিয়ে।  ঋতুর পরে ঋতু এসে চলে গেছে, আমি থেকেছি সকল প্রহরে একই ঘরে, একই তরে, বেখেয়ালিতে। বিচ্ছিন্ন ছিলাম, ছিলাম বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। ছিলাম আমার পথে একা, অচেনা সে পথে বসন্ত দেয়নি দেখা। হিমেল হাওয়া দিয়েছে দোলা, নিযুত বছর ধরে যেভাবে দিয়ে চলেছে সবার চুলে, সবার গালে।  যে মুহূর্ত চলে গেছে সে তো আর আসবে না , হয়তো আসবে নতুন মুহূর্ত, হয়তো সেটি হবে উত্তম অথবা অন্য রকম। আমি প্রস্তুত নতুন মুহূর্তকে আলিঙ্গন করতে।

শৈশবের নীতি কথা

পরিশ্রমে ধন আনে পূন্যে আনে সুখ। আলস্য দারিদ্র্য আনে পাপে আনে দুঃখ। উপরের কথা গুলো আমার নয়, আমার নানী প্রায়ই কথা গুলো বলতেন এবং নানীর ঘরের দেয়ালে লিখে বাঁধানো ছিলো। কথা গুলোর রচয়িতা আমার অজ্ঞাত। তবে কথাগুলো যারই রচিত হোক না কেন, কথা গুলো সার্বজনীন অর্থবহ চিরন্তন সত্য কথা। আমার শৈশবে নানীর মুখে ছন্দময় আরো অনেক কথাই শুনেছি। তাঁর সকল কথার অর্থ আমি তখন বুঝতাম না তবে এখন সব কিছুই বুঝতে পারি। নানীর মুখে শোনা উপরের কথা গুলোকে আমি জীবন দর্শন মনে করি।

দূরত্ব

একটা সময় ছিল যখন পারস্যের কন্যার সাথে প্রণয় ছিল। যদিও দুজন ছিলাম দুই মহাদেশের বাসিন্দা, দূরত্বের কাছে মাথা নোয়াবার নই; এমনি ছিল মনোবল। একে অন্যের সাথে দেখা করার জন্য সকল বাঁধা পাহাড় পর্বত ডিঙিয়ে, দূরত্বকে পিছনে ফেলে নয়নে নয়ন মেলাতে বছরে দুই একবার পাড়ি জমাতাম দুই মহাদেশের মিলন স্থলে, তুরস্কে। দুজন একসাথে, আমার হাত তাঁর বগলে, একসাথে  ঘুরতাম - বেড়াতাম ইস্তানবুল, আন্তালিয়ার পথে প্রান্তরে, নীল আকাশের নিচে, সাগর তীরে, অরণ্যে - লোকালয়ে, রাস্তায় মানুষের ভিড়ে, পারস্য কন্যা আমার হাত ছাড়তোনা কখনোই। পাথরের আসনে দুজনে মুখোমুখি বসে জোস্না রাতে, হাতে হাত রেখে পূর্ণিমা দর্শন, জোস্নায় স্নান। ভূমধ্যসাগরের জল চিকচিক করতো চন্দ্র আলোয়, হাওয়ার আবেশে, দুইজন দর্শক আমি আর সে, অনুভূতিরা গভীর হতো রাতের সাথে। বিদায় বেলায় তাঁর মাথা আমার কাঁধে, ভিজতো গাল তাঁর নয়ন জলে তবু ঠোঁটে হাসি কথার ছলে, যেতে হবে ছেড়ে তবু মন বাঁধ সাধে, আমি সান্তনা দিতাম; আবার দেখা হবে বছর গড়ালে। হাওয়াই জাহাজ উড়াল দিতো, হয়ে যেত সে মেঘের আড়ালে, চোখের আড়ালে। বাড়ি ফিড়ে শুরু হতো আবার দুজনের দিন গোনা। দিন গুনতে গুনতে, একদিন দিন আবার আসতো ফিড়

শৈশব এবং স্নো

Image
ইন্টারনেটে ছবিটা খুঁজে পেলাম। ছবিটা দেখা মাত্র কিছুক্ষণের জন্য আমি শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। আমার সেই হারিয়ে যাওয়া শৈশবে। আমাদের তখন বাড়ী ছিলো। ঘরে গোল কাঁচের ড্রেসিং টেবিল ছিলো। ড্রেসিং টেবিলের এক পাশে সাজানো থাকতো চুড়িদানী। সেই চুড়িদানীতে আমার মায়ের হাতের বিভিন্ন রকমের চুড়ি সাজানো থাকতো, রঙ-বেরঙের কাঁচের চুড়ি, বেদের চুড়ি। মা সেগুলো বিশেষ উপলক্ষ্য ছাড়া হাতে পরতেন না। আমি চুড়ি গুলো নেড়েচেড়ে দেখতাম আর ঝনঝন শব্দ শুনতাম এরপর যেমনটা ছিলো ঠিক তেমনটি করে সাজিয়ে রেখে দিতাম। সেই ড্রেসিং টেবিলের অন্যপাশে আমি জীবনে প্রথমবারের মত এই স্নোর প্যকেটটি দেখেছিলাম। আমি তখনও লিখতে পড়তে শিখিনি, তাই প্যাকেটের গায়ে কি লেখাছিল তা সে সময় আমি বুঝতাম না। প্যাকেটা কেবল হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতাম; একপাশে সুন্দরী এক রমনীর ছবি অন্যপাশে অট্টালিকা, দেবদারু গাছের মত গাছ, আর উচু সাদা কিছু একটা হবে। সব চিন্তাম কিন্তু সাদা অংশটা কি তখন তা বুঝতাম না। মা কে জিজ্ঞাসা করার পর মা বলেছিলেন সাদা অংশটা হল পর্বত যা স্নো পরার কারণে সাদা হয়ে গেছে। শৈশবে স্নো বলতে বুঝতাম সেই ছোট্ট কৌটার সাদা পদার্থ, যা আঙুলে নিয়ে গালে মেখে

গোঁফ ভ্রম

Image
কিছু দিন আগে হঠাৎ করে গোঁফ রেখেছিলাম। গোঁফের কারনে প্রথম দেখাতেই অনেকে আমাকে দক্ষিণ ভারতীয় তামিল নয়তো শ্রীলঙ্কান ভেবে বসে থাকতো। এমনটাই হয়েছিলো বেশ কদিন আগে নরওয়েজিয়ান শিল্পীদের সাথে বড় দিনের মধ্যাহ্ন ভোজের অনুষ্ঠানে। আমার পাশে বসা এক শিল্পী আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় থাকেন? জবাবে বললাম দ্রবাক। তিনি বললেন দ্রবাক সুন্দর শহর, কার্টুনিষ্টদের শহর, কার্টুনিষ্ট গ্যালারী আছে, বাংলাদেশী এক কার্টুনিষ্ট আছে যিনি নিজ দেশে কার্টুন এঁকে জেল খেটেছিলেন, নির্যাতিত হয়েছিলেন তিনিও আপনার মত দ্রবাকেই থাকেন। আমি মুচকি হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি ঐ কার্টুনিষ্টকে চেনেন? তিনি জবাবে বললেন, না কখনো দেখা হয়নি তবে তার সম্পর্কে পত্রিকায় পড়েছি। আমি মুচকি হেসে বললাম, আচ্ছা। আমাকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি তাকে চেনেন? মানে, ঐ বাংলাদেশি কার্টুনিষ্ট কি আপনার বন্ধু? আমি বললাম, জ্বি না, তিনি আমার বন্ধু নন, আমিই তিনি। আমার জবাব শুনে তিনি নড়েচড়ে বসলেন এবং উচ্চ স্বরে হাসতে হাসতে বললেন, সত্ত্যি! আপনিই সেই কার্টুনিষ্ট? উনার অট্ট হাসির কারনে পাশে যারা বসেছিলেন তারা

পরোপকার - ১

গতকাল অসলো থেকে বাসায় ফিরছিলাম। বাসে একজন সত্তুরর্ধো এরিত্রিয়ীন মহিলাকে দেখলাম কুড়ি বা পঁচিশ কেজি ওজনের একটা বস্তা ভর্তি চাউল কিনে বাসে উঠেছেন। বস্তাটি কোথায় রাখবেন তা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। আমি তাকে বস্তাটি এক জায়গায় রাখতে সাহায্য করলাম। তিনি আমার পাশের সিটে এসে বসলেন।  এরপর তিনি যখন গন্তব্যস্থলে এসে বাস থেকে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন আমার কাছে চাউলের বস্তাটি নামিয়ে দেওয়ার জন্য বিনীতভাবে সাহায্য চাইলেন।  আমি তাকে বস্তাটি নামিয়ে দিলাম।  তিনি আমাকে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ, আপনি অনেক দয়ালু।  আমি নিয়মিত চেষ্টা করি মানুষের সামান্যতম উপকার হলেও করতে।  মানুষের মুখে হাসিমাখা প্রসংশা আমার জন্য বড় পাওয়া। 

উপলব্ধি ৪ - Perception 4

The one-sided relationship is not lasting, nor friendship, nor love. Bangla: একতরফা কোন সম্পর্কই দীর্ঘস্থায়ী হয় না, না বন্ধুত্ব, না প্রেম। Norwegian: Det ensidige forholdet er ikke varig, heller ikke vennskap, ikke kjærlighet.