Posts

দূরত্ব

একটা সময় ছিল যখন পারস্যের কন্যার সাথে প্রণয় ছিল। যদিও দুজন ছিলাম দুই মহাদেশের বাসিন্দা, দূরত্বের কাছে মাথা নোয়াবার নই; এমনি ছিল মনোবল। একে অন্যের সাথে দেখা করার জন্য সকল বাঁধা পাহাড় পর্বত ডিঙিয়ে, দূরত্বকে পিছনে ফেলে নয়নে নয়ন মেলাতে বছরে দুই একবার পাড়ি জমাতাম দুই মহাদেশের মিলন স্থলে, তুরস্কে। দুজন একসাথে, আমার হাত তাঁর বগলে, একসাথে  ঘুরতাম - বেড়াতাম ইস্তানবুল, আন্তালিয়ার পথে প্রান্তরে, নীল আকাশের নিচে, সাগর তীরে, অরণ্যে - লোকালয়ে, রাস্তায় মানুষের ভিড়ে, পারস্য কন্যা আমার হাত ছাড়তোনা কখনোই। পাথরের আসনে দুজনে মুখোমুখি বসে জোস্না রাতে, হাতে হাত রেখে পূর্ণিমা দর্শন, জোস্নায় স্নান। ভূমধ্যসাগরের জল চিকচিক করতো চন্দ্র আলোয়, হাওয়ার আবেশে, দুইজন দর্শক আমি আর সে, অনুভূতিরা গভীর হতো রাতের সাথে। বিদায় বেলায় তাঁর মাথা আমার কাঁধে, ভিজতো গাল তাঁর নয়ন জলে তবু ঠোঁটে হাসি কথার ছলে, যেতে হবে ছেড়ে তবু মন বাঁধ সাধে, আমি সান্তনা দিতাম; আবার দেখা হবে বছর গড়ালে। হাওয়াই জাহাজ উড়াল দিতো, হয়ে যেত সে মেঘের আড়ালে, চোখের আড়ালে। বাড়ি ফিড়ে শুরু হতো আবার দুজনের দিন গোনা। দিন গুনতে গুনতে, একদিন দিন আবার আসতো ফিড়

শৈশব এবং স্নো

Image
ইন্টারনেটে ছবিটা খুঁজে পেলাম। ছবিটা দেখা মাত্র কিছুক্ষণের জন্য আমি শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। আমার সেই হারিয়ে যাওয়া শৈশবে। আমাদের তখন বাড়ী ছিলো। ঘরে গোল কাঁচের ড্রেসিং টেবিল ছিলো। ড্রেসিং টেবিলের এক পাশে সাজানো থাকতো চুড়িদানী। সেই চুড়িদানীতে আমার মায়ের হাতের বিভিন্ন রকমের চুড়ি সাজানো থাকতো, রঙ-বেরঙের কাঁচের চুড়ি, বেদের চুড়ি। মা সেগুলো বিশেষ উপলক্ষ্য ছাড়া হাতে পরতেন না। আমি চুড়ি গুলো নেড়েচেড়ে দেখতাম আর ঝনঝন শব্দ শুনতাম এরপর যেমনটা ছিলো ঠিক তেমনটি করে সাজিয়ে রেখে দিতাম। সেই ড্রেসিং টেবিলের অন্যপাশে আমি জীবনে প্রথমবারের মত এই স্নোর প্যকেটটি দেখেছিলাম। আমি তখনও লিখতে পড়তে শিখিনি, তাই প্যাকেটের গায়ে কি লেখাছিল তা সে সময় আমি বুঝতাম না। প্যাকেটা কেবল হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতাম; একপাশে সুন্দরী এক রমনীর ছবি অন্যপাশে অট্টালিকা, দেবদারু গাছের মত গাছ, আর উচু সাদা কিছু একটা হবে। সব চিন্তাম কিন্তু সাদা অংশটা কি তখন তা বুঝতাম না। মা কে জিজ্ঞাসা করার পর মা বলেছিলেন সাদা অংশটা হল পর্বত যা স্নো পরার কারণে সাদা হয়ে গেছে। শৈশবে স্নো বলতে বুঝতাম সেই ছোট্ট কৌটার সাদা পদার্থ, যা আঙুলে নিয়ে গালে মেখে

গোঁফ ভ্রম

Image
কিছু দিন আগে হঠাৎ করে গোঁফ রেখেছিলাম। গোঁফের কারনে প্রথম দেখাতেই অনেকে আমাকে দক্ষিণ ভারতীয় তামিল নয়তো শ্রীলঙ্কান ভেবে বসে থাকতো। এমনটাই হয়েছিলো বেশ কদিন আগে নরওয়েজিয়ান শিল্পীদের সাথে বড় দিনের মধ্যাহ্ন ভোজের অনুষ্ঠানে। আমার পাশে বসা এক শিল্পী আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় থাকেন? জবাবে বললাম দ্রবাক। তিনি বললেন দ্রবাক সুন্দর শহর, কার্টুনিষ্টদের শহর, কার্টুনিষ্ট গ্যালারী আছে, বাংলাদেশী এক কার্টুনিষ্ট আছে যিনি নিজ দেশে কার্টুন এঁকে জেল খেটেছিলেন, নির্যাতিত হয়েছিলেন তিনিও আপনার মত দ্রবাকেই থাকেন। আমি মুচকি হেসে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি ঐ কার্টুনিষ্টকে চেনেন? তিনি জবাবে বললেন, না কখনো দেখা হয়নি তবে তার সম্পর্কে পত্রিকায় পড়েছি। আমি মুচকি হেসে বললাম, আচ্ছা। আমাকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি তাকে চেনেন? মানে, ঐ বাংলাদেশি কার্টুনিষ্ট কি আপনার বন্ধু? আমি বললাম, জ্বি না, তিনি আমার বন্ধু নন, আমিই তিনি। আমার জবাব শুনে তিনি নড়েচড়ে বসলেন এবং উচ্চ স্বরে হাসতে হাসতে বললেন, সত্ত্যি! আপনিই সেই কার্টুনিষ্ট? উনার অট্ট হাসির কারনে পাশে যারা বসেছিলেন তারা